মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন
আব্দুস সবুর স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর তানোরে জিআর প্রকল্পের বিভিন্ন ইউনিয়নে বরাদ্দ কৃত ১৩ টন চাল বিতরণ না করে অতি গোপনে গায়েব করা হয়েছে বলে একাধিক সুত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত জুলাই মাসের শেষের দিকে ও আগস্টের শুরুতে চাল গায়েবের ঘটনাটি ঘটে বলেও অভিযোগ রয়েছে। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য বরাদ্দ কৃত চাল বিতরণ না করে বন্যা কবলিত এলাকায় ফেরত দেয়া হবে বলে ইউপি চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে কৌশলে স্বাক্ষর করে নেয় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবলীগ সভাপতি লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তা বাবুরা। তবে সরকার পতনের আগেই চালগুলো লুট করা হয়েছে বলেও সুত্র নিশ্চিত করেন। সরেজমিনে তদন্ত করলেই বেরিয়ে আসবে চাল লুটের ঘটনা টি। এবিষয়ে জানতে পিআইও অফিসে গত কয়েক দিন ধরে তথ্য নিতে গেলে পিআইও আল মামুনকে পাওয়া যায়নি এবং তার ০১৭০০৭১৬৯৩৪ মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।
খাদ্য অফিস জানায়, গত জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে বা আ”লীগ সরকারের সময় উপজেলার কলমা ইউপিতে ৪ টন, বাঁধাইড় ইউপিতে ২ টন, পাঁচন্দর ইউপিতে ২ টন, সরনজাই ইউপিতে ১ টন, তালন্দ ইউপিতে ২ টন, কামারগাঁ ইউপিতে ২ টন ও চান্দুড়িয়া ইউপিতে ১ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়।এসব বরাদ্দ কৃত চালের ডিও হয় জুলাই মাসের ৩১ তারিখের আগে। উপজেলা খাদ্য অফিসার মলিউজ্জামান সবিজ জানান, পিআইও অফিস থেকে বরাদ্দ হয়েছে। খাদ্য অফিস ডিও দেয়ার মালিক। চাল বিতরণ হবে কিনা সেটা পিআইও এবং নির্বাহী কর্মকর্তা বলতে পারবেন। গত বুধবার খাদ্য অফিসে ভিজিএফ চালের ডিও নিতে আসেন তালন্দ ইউপি চেয়ারম্যান নাজিমুদ্দিন বাবু। তার কাছে জানতে চাওয়া হয় জিআরের চাল বিতরণ হয়েছে কিনা তিনি কোন ধরনের কথা বলতে রাজি হননি। এই চেয়ারম্যান সাবেক ইউপি আ”লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ময়নার একান্ত সহচর। তার সাথে কথা বলা অবস্থায় কলমা ইউপির চেয়ারম্যানও আসেন। তার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, খাদ্য অফিসে স্বাক্ষর দিতে হয়েছে। চাল পাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখন পর্যন্ত পায়নি।
তালন্দ ইউপির সচিব ওয়াকিল জানান, আমরা ২ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছিলাম। কিন্তু বন্য কবলিত এলাকায় দিবে বলে ফেরত নেয়। শুধু সরনজাই ইউনিয়ন বিতরণ করতে পেরেছে। গোল্লাপাড়া খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মুকুলের কাছে জানতে চাওয়া হয় বরাদ্দ কৃত জিআরের চাল কিভাবে ফেরত যাই তিনি জানান চাল বরাদ্দ হলে সেটা ফেরত যায় না, সবাই চাল তুলেছে।
বেশকিছু ইউপি সদস্যরা জানান, আমাদের কাছ থেকে চেয়ারম্যানরা তালিকা নিয়েছিল। কিন্তু চাল দেয় নি। কিছু বললেই সাব কথা পরে দেখা যাবে। ওই সময় আ”লীগ সরকার ক্ষমতায়। এক ইউপি বাদে সব ইউপিতে আ”লীগের চেয়ারম্যান। কোন কিছু বলাও যেত না। ইচ্ছে মত তারা সবকিছু করত। তবে কলমা ইউপির চেয়ারম্যান সাবেক এমপি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বিরোধী। তাকেও বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করা হত।গত বুধবার দুপুরের দিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আল মামুনের কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় তিনি নেই। মোবাইলে কল করা হলে রিসিভ করেন নি।
বাঁধাইড় ইউপির চেয়ারম্যান আতাউর রহমানের মোবাইলে কল করা হলে বন্ধ পাওয়া যায়। বুধবার দুপুরের দিকে জেলা ত্রান পুনর্বাসন কর্মকর্তা সালাহ উদ্দিন আল ওয়াদুদের সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি জানান, এসব চাল আত্মসাতের কোন সুযোগ নেই, খোঁজ খবর নিয়ে এমন হয়ে থাকলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও মাসতুরা আমিনার সরকারি মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি রিসিভ করেন নি। জেলা প্রশাসক (ডিসি)র সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অনিয়ম দূর্নীতি করার কোন সুযোগ নেই। যারাই চাল আত্মসাতের সাথে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Copyright @ 2024 Jonotarsomoy24.com । জনতার সময়২৪. All rights reserved
Leave a Reply